লক্ষ্মীপুরে দশম শ্রেণির স্কুলছাত্রীকে উত্যক্ত ও ইভটিজিং এর প্রতিবাদ করায় স্বজনদের উপর হামলা মারধরের অভিযোগ উঠেছে মনোয়ার হোসেন নামে এক ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে । উক্ত ঘটনায় মনোয়ার হোসেন সহ ৩ জন আহত হয়েছে বলে যানা যায় । লক্ষ্মীপুর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মনোয়ার সদর উপজেলার লাহারকান্দি ইউনিয়ন ছাত্রলীগের যুগ্ম-আহবায়ক। অপর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহতরা হলেন ছাত্রীর মামা হ্রদয় মাহমুদ ও বিজয় মাহমুদ ।ঘটনাটিকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বিএনপি-জামায়াতের হামলা বলে প্রচারণা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) রাতে লাহারকান্দি ইউনিয়নের চাঁদখালী বাজারে মনোয়ারের কাছ থেকে ছাত্রীর মামা মো. বিজয় ও চাচাতো ভাই মো. জিয়ান উত্যক্তের ঘটনার কারণ জানতে চায়। এতে মনোয়ার ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে৷ এনিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে তারা মারামারিতে জড়িয়ে পড়ে। পরে মনোয়ারকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়৷ খবর পেয়ে রাতেই জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন ভূঁইয়া হাসপাতালে তাকে দেখতে যান।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী লাহারকান্দি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি সদস্য জাবেদ হোসেন মামুন বলেন, মনোয়ার এক স্কুল ছাত্রীকে বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়ার পথে উত্যক্ত করে। এতে ছাত্রীর স্বজনরা তার কাছে ঘটনাটি জানতে চায়। এ ঘটনায় মনোয়ার তাদের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। পরে উভপক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এখানে রাজনৈতিক কোন ঘটনা নেই।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মনোয়ার জানিয়েছেন, কোন মেয়েকে উত্যক্তের সঙ্গে তিনি জড়িত নন।হামলাকারীরা বিএনপি জামায়াতের সদস্য। স্থানীয়রা এখন তার বিরুদ্ধে অপ-প্রচার চালাচ্ছে।
তবে প্রত্যক্ষদর্শী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের একাধিক নেতা ঘটনাটি রাজনৈতিক কোন হামলা নয় বলে জানিয়েছেন। তাদের দাবি, মনোয়ার স্কুল ছাত্রীকে উত্যক্ত করতো। এ ঘটনায় মারধরের শিকার হয়। দলীয় পদবী রক্ষায় তিনি এখন জামায়াত-বিএনপির হামলা বলে প্রচার করছেন।
ভুক্তভোগী ছাত্রীর বাবা জানান, বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়ার পথে তার মেয়েকে মনোয়ার উত্যক্ত করতো। একাদিকবার কু-প্রস্তাবসহ নানান ধরণের হুমকি দিয়েছে। ভয়ে মেয়েটি প্রথমে কাউকে কিছু বলেনি। সম্প্রতি এক সহপাঠির মাধ্যমে মনোয়ার তাকে একটি চিরকুট দেয়। এতে সে স্বজনদেরকে বিষয়টি জানায়৷ উত্যক্ত করতে নিষেধ করায় মনোয়ার ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। পরে লোকজন নিয়ে এসে তার (ছাত্রীর) মামা বিজয়, হৃদয়, রিফাত ও জিয়ানকে মনোয়ার মারধর করে। উল্টো মনোয়ার হাসপাতাল ভর্তি হয়ে দলীয় প্রভাব খাটিয়ে পুলিশ দিয়ে তাদের হয়রানি করছে। প্রশাসনের কাছে বিচার ও মেয়ের নিরাপত্তা চাই ।
জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন ভূঁইয়া বলেন, ঘটনাটি দুইভাবে শুনেছি। সাংগঠনিকভাবে ঘটনাটির সত্যতা যাচাইয়ে চেষ্টা করছি। তদন্ত শেষে সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে মনোয়ারকে ২০২১ সালে একবার লাহারকান্দি ইউনিয়ন ছাত্রলীগের দায়িত্ব থেকে অব্যহতি দেওয়া হয়।
লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তফা কামাল বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তবে এ ব্যাপারে কেউ থানায় অভিযোগ করেনি। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।