৫ বছর আগে মুরাদ হোসেন (২২) নামে এক শিক্ষার্থীকে পরীক্ষায় নকলে বাধা দিয়েছিলেন শিক্ষক হেলাল উদ্দিন (৩১)। এ ঘটনার পর থেকে সেই শিক্ষকের প্রতি ক্ষুব্ধ ছিলেন মুরাদ।
অবশেষে সেই ক্ষোভ থেকে শিক্ষককে মারধর করেছেন তিনি। এ ঘটনায় আহত শিক্ষক হেলালকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হামলায় তার গাল এবং শরীরের বিভিস্থান জখম হয়েছে।
শনিবার (২৮ মে) সকাল ৮টার দিকে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার টুমচর ইউনিয়নের টুমচর মাদরাসা প্রাঙ্গণে এ অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে।
সাবেক ছাত্রের হাতে আহত হেলাল উদ্দিন টুমচর আসাদ একাডেমির বিজ্ঞানের শিক্ষক। বাড়ি জেলা সদর উপজেলার মান্দারী ইউনিয়নের গন্ধর্ব্যপুর গ্রামে।
হামলাকারী ছাত্র মুরাদ হোসেন টুমচর গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে। তিনি টুমচর আসাদ একাডেমির ২০১৮ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিলেন। তবে নির্বাচনী পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়ে আর পরীক্ষা দিতে পারেননি।
আহত শিক্ষক হেলাল উদ্দিন এবং তার সহকর্মী আওলাদ হেসেন ও সুকুমার চন্দ্র অধিকারী বলেন, ৫ বছর আগের ক্ষোভ থেকে মুরাদ দলবল নিয়ে এ হামলা চালিয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। থানায়ও মামলার প্রস্তুতি চলছে। আমরা এ ঘটনার বিচার চাই।
শিক্ষক হেলাল উদ্দিন বলেন, সকালে আমি মোটরসাইকেল যোগে বিদ্যালয়ে যাওয়ার সময় টুমচর মাদরাসার পাশে পৌঁছামাত্র মুরাদ ও তার এক সহযোগী আমার গতিরোধ করে। এ সময় সে আমাকে বলে- ‘তোর কারণে আমার জীবন নষ্ট হয়ে গেছে, তুই নকল ধরার কারণে আমি পরীক্ষায় পাশ করিনি। তা না হলে আমি এসএসসি পাস করতাম’। এ কথা বলেই মুরাদ ও তার সহযোগী আমাকে মারধর শুরু করে। এক পর্যায়ে আমার হেলমেট সরিয়ে মাথায় এলোপাতাড়ি ঘুষি দেয়। পরে স্থানীয়রা এগিয়ে এসে আমাকে তাদের হাত থেকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে পাঠায়।
তিনি বলেন, হামলার সময় মুরাদের সঙ্গে আরও ৫-৬ জন ছেলে দূরে অবস্থান করছিল।
৫ বছর আগের ঘটনার বিষয়ে তিনি বলেন, মুরাদ আমার বিদ্যালয় থেকে ২০১৮ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিল। ২০১৭ সালের নির্বাচনী পরীক্ষা চলাকালে ইংরেজি পরীক্ষার দিন সে কাগজ দেখে দেখে খাতায় লিখছিল। ওইদিন আমি পরীক্ষার হলের দায়িত্বে ছিলাম। বিষয়টি দেখতে পেয়ে নকলটি নিয়ে যাই এবং তাকে সতর্ক করি। এর পরদিনও সে পরীক্ষায় অংশ নেয়। তবে অকৃতকার্য হয়ে আর এসএসসি পরীক্ষা দিতে পারেনি। সেই ক্ষোভ থেকেই ৫ বছর পর আমার ওপর হামলা করেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফারজানা নুর বলেন, ঘটনাটি জানার পর আমার এক শিক্ষককে দায়িত্ব দিয়েছি থানায় অভিযোগ দেওয়ার জন্য।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তফা কামাল বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।