উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ও কয়েকদিনের বৃষ্টিতে কুড়িগ্রামের উলিপুরে ব্রহ্মপুত্র ও তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় দেখা দিয়েছে তীব্র নদীভাঙন।
গত কয়েকদিনের নদীভাঙনে বসতভিটার পাশাপাশি ফসলি জমিও নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙনের হাত থেকে রক্ষা পেতে স্থানীয়রা বাঁশের খুঁটি গেড়ে গাছের ডাল ফেলে পাইলিং দিয়ে ভাঙন রোধের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
সরেজমিন শনিবার দুপুরে ভাঙনকবলিত এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার তিস্তা নদী বেষ্টিত থেতরাই ইউনিয়নের দড়ি কিশোরপুর গ্রামে গত এক সপ্তাহে নদীভাঙনের ফলে প্রায় ৩০টি পরিবার বাড়ি-ঘর সরিয়ে নিয়েছে। বর্তমানে ওই এলাকায় ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে অর্ধশত বাড়ি-ঘর, ফসলি জমিসহ চলাচলের রাস্তা।
ভাঙনের কবল থেকে রক্ষা পেতে বাড়ি-ঘর সরিয়ে নিয়েছে ওই এলাকার অনেকেই। তিস্তা নদীর প্রবল স্রোতে থেতরাই ইউনিয়নের দড়ি কিশোরপুর, নগরপাড়া, হোকডাঙ্গা গ্রামের মাস্টারপাড়া, মাঝিপাড়া, চেয়ারম্যানপাড়া, দালালীপাড়াসহ আশপাশের কয়েকটি গ্রাম ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে।
ওই এলাকার ইউপি সদস্য আ. হালিম সরকার জানান, গত এক সপ্তাহের ভাঙনে ইউনিয়নের ৪, ৭ ও ৮নং ওয়ার্ডে নদীর পাড়ের অনেক বাড়ি-ঘর ও বসতভিটার জায়গা-জমি তিস্তা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, নদী অনেক দূরে ছিল, হঠাৎ গতি পরিবর্তন করে ভাঙন শুরু হয়। এ পর্যন্ত এলাকার প্রায় ৫০টি বাড়ি-ঘর, বসতভিটা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। আমরা এ ব্যাপারে জনপ্রতিনিধিরা উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণকে বিষয়টি অবগত করেছি। এ ছাড়া ব্রহ্মপুত্র নদ বেষ্টিত উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নে হাতিয়া গ্রাম, নয়াডারা, নীলকণ্ঠ গ্রামসহ আশপাশের এলাকার গত দুই মাসে শতাধিক পরিবারের বাড়ি-ঘর নদীঘর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ায় তারা বাঁধের রাস্তায় আশ্রয় নিয়েছেন।
থেতরাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী সরকার জানান, তিস্তা নদীর ভাঙনের বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে অবগত করা হয়েছে। ভাঙন রোধে পাইলিং করার জন্য স্থানীয়দের ব্যক্তিগতভাবে আর্থিক সহযোগিতা করেছি। এ ছাড়াও ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল কাদের বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণকে নদীভাঙনের ব্যাপারে অবগত করা হয়েছে।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম জানান, ইতিমধ্যে ভাঙনকবলীত এলাকাগুলো পরিদর্শন করা হয়েছে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলে সংস্কারের কাজ শুরু করা হবে।