শরীয়তপুরে ফসলি জমিতে গড়ে উঠেছে এম কে এম ব্রিক্স নামে একটি ইটভাটা। লাইসেন্সবিহীন এই ইটভাটার কালো ধোঁয়ায় নষ্ট হচ্ছে এলাকার পরিবেশ। আশপাশের জমির চাষাবাদও বিপন্ন হচ্ছে।
জেলা শহরসংলগ্ন চাদঁপুর-শরীয়তপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে চরসোনামুখী এলাকার বালার নামক স্থানে ইটভাটাটি গড়ে উঠেছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, এ ইটভাটায় শিশুদের দিয়ে কাজ করানো হচ্ছে। ইটভাটার কারণে একদিকে যেমন ফসলের ক্ষতি হচ্ছে অন্যদিকে বিষাক্ত কালো ধোঁয়ায় আশপাশের গাছপালা মরে যাচ্ছে।
শুধু তাই নয়, মহাসড়কের পাশে ইটভাটা হওয়ায় অবৈধ ট্রলি, মাহেন্দ্র ও ট্রাক্টরের ভিড়ে অহরহ সড়ক দুর্ঘটনাও ঘটছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
সম্প্রতি ইটভাটার ট্রলির সঙ্গে ধাক্কা লেগে মোটরসাইকেল আরোহী নাছির আহম্মেদ আলী নামের এক সাংবাদিক মারাত্মকভাবে আহত হন।
এ বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা নুরুজ্জামান সোহাগ বলেন, মহাসড়কের সাথে ইটভাটা হওয়ায় প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে মানুষ। অনেকেই পঙ্গুত্ব বরণ করছে।
স্থানীয় কৃষক ফারুক আহমেদ বলেন, এই ইটভাটা হওয়ার পর থেকে আমাদের এলাকায় আগের মতো ফসল ফলে না। গাছেও ফল কম ধরে।
জানা গেছে, ইটভাটাটি পরিবেশ অধিদফতর থেকে ছাড়পত্র নিলেও লাইন্সেস নবায়ন করেনি তারা।
স্থানীয়দের এসব অভিযোগ ও ইটভাটার লাইন্সেস নবায়ন করা হয়নি জানার পরেও রহস্যজনক কারণে প্রশাসন নিরব থেকেছে।
জেলা প্রশাসন নেজারত বিভাগ ও স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, চরসোনামুখী এলাকায় ৫ একর ফসলি জমির ওপর তৈরি এম কে এম ব্রিক্স ফিল্ডের মালিক মো. মোস্তফা বেপারী নামের এক ব্যবসায়ী।
জেলা প্রশাসনের এক কর্মকর্তা জানান, ইট ভাটা স্থাপন নিয়ন্ত্রণ আইন অনুযায়ী, কৃষি জমি থেকে মাটি কাটা যাবে না এবং সেখানে ইটভাটা তৈরি নিষিদ্ধ।
এরপরও প্রশাসনের নাকের ডগায় কিভাবে ইটভাটা তৈরি করা হলো এবং কিভাবে পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র পেল সে প্রশ্নে এলাকাবাসীর মধ্যে গুঞ্জন চলছে।
এ ব্যাপারে পরিবেশ অধিদফতর ফরিদপুর কার্যালয়ের উপপরিচালক ড. মো. লুৎফর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য তার মোবাইল ফোনে বারবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেনি।
ইটভাটার মালিক মো. মোস্তফা বেপারী বলেন, ‘আর সব ইটভাটা যেভাবে হয়েছে আমিও সেভাবে ইটভাটা তৈরি করছি। আমার ইটভাটার ধোঁয়ায় ফসলের কোনো ক্ষতি হচ্ছে না। পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র এনে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে জমা দিয়েছি। খুব শিগগিরই লাইন্সেস নবায়ন করা হবে।’
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নেজারতের নাজির মো: সেলিম বলেন, ‘ইতোমধ্যে ইটভাটা কর্তৃপক্ষ আমাদের কাছে পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র জমা দিয়েছে। আমরা কাগজপত্র খতিয়ে দেখে লাইসেন্স দেয়ার ব্যবস্থা করব।’
শরীয়তপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নেজারত ডেপুটি কালেকটর (সহকারী কমিশনার) মো. পারভেজ বলেন, ‘অভিযোগের বিষয়ে আমি অবগত নই। এলাকার লোকজন লিখিত অভিযোগ করলে আমি তদন্ত করে ব্যবস্থা নিব।